গল্পে গল্পে বাংলা উপসর্গ মনে রাখার সহজ উপায়

উপসর্গ কাকে বলে? যেসব বর্ণ বা বর্ণের সমষ্টি ধাতু এবং শব্দের আগে বসে সাধিত শব্দের অর্থের পরিবর্তন, সম্প্রসারণ কিংবা সংকোচন ঘটায়, তাদের বলা হয় উপসর…

বাংলা সাহিত্যের টুকিটাকি (১ম পর্ব)

১. বাংলা সাহিত্যের প্রাচীন যুগের নিদর্শন হলো? উত্তরঃ চর্যাপদ। ২. আরাকান রাজসভার কবিদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ কবির নাম কী? উত্তরঃ আলাওল। ৩. যুগসন্ধি…

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ

আস্‌সালামুআলাইকুম, প্রাথমিক শিক্ষাসহ দেশের সার্বজনীন শিক্ষা কার্যক্রমকে আরো উন্নত ও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন করতে সরকার বদ্ধপরিকর।

মনকে শান্ত রাখতে অবলম্বন করুন ৫টি কৌশল

বর্তমানে সবকিছুই প্রতিদন্ধীতাপূর্ণ হয়ে যাচ্ছে। আর এই প্রতিযোগীতায় অবর্তীর্ণ হয় লাখো মানুষ। কিন্তু জয়ী হয় শুধুমাত্র তারাই যারা প্রয়োজনের মুহুর্তে মাথা ঠান্ডা রেখে সিদ্ধান্ত নিতে পারে, মনে রাখতে পারে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রনে।

জানুন সফলতার পিছনে কাজ করা ১২টি গুণ সম্পর্কে

জীবনের সফলতার মুখ কে না দেখতে চায় বলুন? এই সফলতা পাওয়ার জন্যই মানুষ প্রতিনিয়ত সামনের দিকে ছুটে চলেছে। কিন্তু বেশিরভাগ সময়েই সফলতা থেকে যায় অ

সোমবার, ২ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫

ইতিহাসের সেরা পাঁচ মিথ্যা!

কথায় আছে, ইতিহাস থেকে কেউ কখনো শিক্ষাগ্রহণ করে না। আবার এটাও বলা হয়, ইতিহাস শুধু বিজয়ীদের পক্ষেই কথা বলে, পরাজিতদের পক্ষে নয়। সে যাই হোক, কখনো কখনো ইতিহাসে শেষ পর্যন্ত সত্যেরই জয় হয়েছে, সেটা যত দেরিতেই হোক না কেন। আজ আমরা ইতিহাস প্রসিদ্ধ সেরা পাঁচ সত্য ঘটনা সম্পর্কে জানবো যেগুলো পরে পুরোপুরি মিথ্যা বলে প্রমাণিত হয়।

(১) নাৎসী প্রোপাগান্ডা

১৯৩০ সালে জার্মানিতে যখন নাৎসিবাদের উত্থান ঘটে তখন জার্মানীতে অবস্থানরত ইহুদিদের উপর চরম অত্যাচার শুরু হয়। এক সময় সেমিটিক (আরব ও ইহুদী সম্পর্কিত) মনোভাব এতটাই তীব্র হয়ে উঠে যে সেটিকে জাতীয় পরিকল্পনার অন্তর্ভুক্ত করা হয়। আর এর নাম দেয়া হয় "The Final Solution,”, যার উদ্দেশ্য ছিল ইহুদীদেরকে পৃথিবীর বুক থেকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়া। পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করার জন্য, হিটলার ও তার প্রোপাগান্ডা মন্ত্রী গোয়েবলস পুরো জার্মানি জুড়ে এক বিশাল প্রচারণা শুরু করেন এই বলে যে, ইহুদীরা জার্মানীর শত্রু। শুধু তাই নয়, প্রচারমাধ্যমের উপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে ইহুদীদেরকে জার্মানিতে বিদ্যমান তৎকালীন সব সমস্যার জন্য দায়ী করা হয়, এমনকি প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির পরাজয়ের জন্যও! শুধু তাই নয়, এও বলা হয় মধ্যযুগে ইহুদীরা ধর্মীয় রীতির নামে ছোট ছোট খ্রিস্টান শিশুদের হত্যা করতো ও তাদের রক্ত রুটির সাথে মিশিয়ে খেয়ে ফেলতো। হিটলার ও তার সহকারীদের মূল ভাবনা ছিল এটাই যে, একটি মিথ্যা কথাকে ক্রমাগত বলার মাধ্যমে জনগণের মাঝে সত্য হিসেবে দাঁড় করানো যায়। ধীরে ধীরে জার্মানরা মিথ্যাগুলোকেই সত্য হিসেবে ভাবতে শুরু করে ও পরিস্থিতি খারাপের দিকে চলে যায়।


(২) ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারি

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন ২য় মেয়াদে নির্বাচনে অংশ নেয়ার আগের ঘটনা। ওয়াটারগেট হোটেলে অবস্থিত ডেমোক্রেটিক ন্যাশনাল কমিটির হেডকোয়ার্টারে ৫ ব্যক্তিকে বিনা অনুমতিতে প্রবেশের জন্য আটক করা হয়। ঘটনার বিস্তারিত জানা যায় এর পরের বছর। এটা পরিষ্কার হয়ে যায়, নিক্সনের কাছের কর্মকর্তারাই সেই ৫ ব্যক্তিকে ডেমোক্রেটিক পার্টির সদর দপ্তরে পাঠিয়েছিলেন সেখানে ফোন বা টেপ রেকর্ডারের মাধ্যমে আড়ি পাতার জন্য। শীঘ্রই প্রশ্ন উঠে, নিক্সন কি এই ঘটনা সম্পর্কে কিছু জানতেন? তিনি কি এই ঘটনার মূল উস্কানিদাতা? ৪০০ জন সম্পাদকের সামনে নিক্সন তার বিরুদ্ধে আনীত সব অভিযোগ অস্বীকার করেন। যাই হোক, তদন্তে তার দাবি মিথ্যা প্রমাণিত হয়, কংগ্রেসে তার বিরুদ্ধে ইম্পিচমেন্ট বা অভিশংসনের প্রক্রিয়া শুরু হবার আগেই তিনি পদত্যাগ করেন।‘


(৩) আলফ্রেড ড্রেফাসের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ

১৯ শতকে ফরাসি সেনাবাহিনীর একজন ইহুদি অফিসার আলফ্রেড ড্রেফাসের বিরুদ্ধে আনা হয় গুরুতর এক অভিযোগ। সেটি হচ্ছে তিনি শত্রুপক্ষ জার্মানির কাছে গোপন সামরিক তথ্য পাচার করেছেন। সাড়া জাগানো সেই বিচারে ড্রেফাস দোষী সাব্যস্ত হন, তাকে ডেভিল’স দ্বীপে আজীবন কারারুদ্ধ করে রাখার রায় দেয়া হয়। ইহুদীবিদ্বেষী শিবির তাকে দেশপ্রেমহীন ইহুদী হিসেবে চিহ্নিত করে। যাই হোক বিতর্ক চরমে উঠে, যখন জানা যায় যে চিঠি নিয়ে এত কান্ড সেটি জাল ও মূল দোষী হচ্ছে ফরাসি সেনাবাহিনীরই এক মেজর এস্টারহ্যাজি। ফরাসি কর্তৃপক্ষ পুরো বিষয়টি এড়িয়ে যেতে চাইলে ড্রেফাসের একদল সমর্থক তৈরি হয় যারা নিজেদেরকে ‘ড্রেফাসেডারস’ নামে পরিচয় দিত। তারা চাইতো ড্রেফাসের কেস যেন আবার শুরু করা হয়, যেখানে অনেকেই এর বিরোধিতা করছিল। ১২ বছর ধরে তীব্র বিতর্ক আর বেশ কিছু সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সংঘটিত হয়। চলে রাজনৈতিক দলাদলি। শেষ পর্যন্ত মেজর জোসেফ হুবার্ট হেনরি মূল নথিপত্র জাল করার দায় স্বীকার করে আত্মহত্যা করলে আবার নতুন করে তদন্ত শুরু হয়। আদালত এবারও ড্রেফাসকে দোষী সাব্যস্ত করে কিন্তু প্রেসিডেন্ট তাকে ক্ষমা করে দেয়। এর কয়েক বছর পর সিভিল কোর্ট ড্রেফাসকে নির্দোষ বলে রায় দেয়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ড্রেফাস পূর্ণ মর্যাদা নিয়ে সাফল্যের সাথে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অংশ নেন।


(৪) অ্যানা এন্ডারসন অথবা এলিয়াস আনতাসিয়া ?

১৯১৮ সাল, রাশিয়াতে তখন বলশেভিক বিপ্লব তীব্র হয়ে উঠেছে। বিপ্লবীরা জার ২য় নিকোলাস ও তার পরিবারের সবাইকে খুঁজে খুঁজে হত্যা করেছে। উদ্দেশ্য এটাই যে, ভবিষ্যতে জারতন্ত্রের সাথে জড়িত কেউ যেন আর ক্ষমতায় না আসতে পারে। দ্রুত গুজব রটলো, জার পরিবারের কিছু সদস্য এই হত্যাকাণ্ড এড়িয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে ও তারা পালিয়ে গিয়েছে। ১৯২০ সালে এরকমই এক ‘উত্তরাধিকারী’র এর কথা জানা যায়, যে নিজের নাম বলেছিল অ্যানা এন্ডারসন। অ্যানা একটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল আত্মহত্যার এক ব্যর্থ চেষ্টার পর। সে স্বীকার করে যে তার নাম অ্যানা এন্ডারসন নয়, সে আসলে জার পরিবারের সদস্য, সবচেয়ে ছোট মেয়ে প্রিন্সেস এলিয়াস আনতাসিয়া। প্রায় সবাই তার দাবি মেনে নেয়, কারণ তার চেহারাতে আনতাসিয়ার ছবির সাথে অদ্ভুত মিল ছিল। এছাড়া রাশিয়ার রাজপরিবার ও রাজপ্রাসাদের ব্যপারেও তার অদ্ভুত রকম জ্ঞান ছিল, যেন সে আগে সেখানেই ছিল। কিন্তু ১৯২৭ সালে এক নারী নিজেকে অ্যানা এন্ডারসনের রুমমেট বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, অ্যানার আসল নাম ফ্রাঞ্জিসকা শ্যাঞ্জকোস্কা, আর অবশ্যই সে প্রিন্সেস আনতাসিয়া নয়। যাই হোক, এগুলোর কোন কিছুই অ্যানাকে তার দাবি থেকে টলাতে পারে নি। কে চায় স্বেচ্ছায় তারকাখ্যাতি বর্জন করতে। ১৯৮৪ সালে অ্যানা মারা যান। শেষ পর্যন্ত জার পরিবারের সব সদস্যের দেহাবশেষের ডি এন এ-র সাথে অ্যানার দেহের ডি এন এ মিলিয়ে দেখা হয়, যাতে প্রমাণিত হয় অ্যানা মিথ্যা কথা বলে আসছিলেন!


(৫) হ্যান ভন মিগোরানের নকল চিত্রকর্মঃ
 
এই মিথ্যা কথার সূত্রপাত হয় সমালোচকদের খুশি করার জন্য। শিল্পী হ্যান ভন মিগেরান সব সময় ভাবতেন তিনি তার যোগ্য সমাদর পাচ্ছেন না। শিল্পবোদ্ধাদের কাছ থেকে প্রশংসা পাবার জন্য তিনি এক কৌশলের আশ্রয় নিলেন। বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে, বিদ্বজনেরা মহান ভারমার বাইবেলের বিভিন্ন বিষয়ের উপর অনেক গুলো ছবি এঁকেছেন কিনা সেটি নিয়ে তীব্র বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন। মিগেরান এটিকে মোক্ষম সুযোগ হিসেবে কাজে লাগালেন। একটি বিতর্কিত চিত্রকর্ম ছিল "The Disciples at Emmaus.”। রঙ ও ফাটলগুলোসহ মিগেরান এই ছবিটি এত নিখুঁতভাবে নকল করলেন যে সমালোচকরা বিশ্বাস করলেন এটি মহান ভারমারেরই আঁকা। ভারমারের হারিয়ে যাওয়া এই চিত্রকর্মের সন্ধানলাভ ও সবার সামনে তুলে ধরার জন্য সবাই শতমুখে মিগেরানের প্রশংসা করতে শুরু করে ও মিগেরান একজন গুরত্বপূর্ণ ব্যক্তিতে পরিণত হন। খ্যাতির সাথে তিনি দুঁহাতে টাকা কামাতে শুরু করেন। মিগেরানের লোভ বেড়েই চলে, তিনি আর অনেক নকল চিত্রকর্ম ভার্মারের চিত্রকর্ম বলে বিক্রি করা শুরু করলেন এক সময় বেচারা একটা ভুল করে বসলেন। তিনি নাৎসী পার্টির একজন উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তার কাছে একটি নকল চিত্রকর্ম বিক্রি করেন। যুদ্ধের পর মিত্র বাহিনী তাকে জাতীয় সম্পদ শত্রুবাহিনীর হাতে তুলে দেয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস। এবার তাকে আবার আঁকার জন্য বসতে হয় তার মুক্তির জন্য। কর্তৃপক্ষের সামনেই তিনি তার চিত্রকর্ম নকল করার ক্ষমতা প্রদর্শন করেন। যাই হোক, তাকে এক বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয় কিন্তু কারাজীবন শুরুর ২ মাসের মাথায় তিনি হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান।