বর্তমানে সবকিছুই প্রতিদন্ধীতাপূর্ণ হয়ে যাচ্ছে। আর এই প্রতিযোগীতায় অবর্তীর্ণ হয় লাখো মানুষ। কিন্তু জয়ী হয় শুধুমাত্র তারাই যারা প্রয়োজনের মুহুর্তে মাথা ঠান্ডা রেখে সিদ্ধান্ত নিতে পারে, মনে রাখতে পারে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রনে। অস্থিরতা আপনার জীবনকে করতে পারে অভিজ্ঞতাময় কিন্তু বেঁচে থাকার ভীতটা তাতে মোটেও মজবুত হয় না। মনটাকে শান্ত করে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌছাবার জন্য নিরবিচ্ছিন্ন চেষ্টাই একজন মানুষকে সফলতার পথে বহুদূর অগ্রসর করে। "প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহণ" করাটাই আসল বিষয় হলেও প্রতিযোগীতায় জেতা কিন্তু অন্যরকম অনুভূতির অংশ। হারতে মানুষ কখনোই পছন্দ করে না। জেতার সুযোগ পেলে তা হাতছাড়া করে না। আর হারতে হারতে মানুষের মনে বাধে অস্থিরতা।
প্রতিযোগীতার এই অস্থির পরিবেশে মনকে আর শান্ত রাখা সম্ভব হয়ে উঠছে না? মনে হতাশা বাসা
বেঁধেছে? কিন্তু এই অস্থির পরিবেশে আপনি নিজেও অশান্ত মন নিয়ে কিছুই করতে
পারছেন না? বরঞ্চ আপনার নিজেরই কি শারীরিক দিক থেকে ক্ষতির সম্মুখীন হতে
হচ্ছে? তাই যত কষ্টই হোক না কেন আপনাকে নিজের মনকে শান্ত রাখার উপায় খুঁজতে
হবে। চলুন তাহলে মনকে শান্ত রাখার কিছু উপায় দেখে নেয়া যাক। এইসব উপায়ে হয়ত আপনি
নিজের মনকে কিছুটা শান্তি দিতে পারেন।
দিন শেষে নিজেকে একটু স্বস্তি পেতে দিন:
সারাদিন ব্যস্ত সময় কাটিয়ে, ঝুঁকি আর সহিংসতার মাঝে দিন পার করে স্বভাবতই
আপনার মন অস্থির হয়ে ওঠে। এমন অবস্থায় দিন শেষে বাড়ি ফিরেই টেলিভিশন বা
ইন্টারনেট নিয়ে বসবেন না। বরং খানিকটা সময় নিরিবিলি বিশ্রাম করুন, চোখ বন্ধ
করে কিছুক্ষণ শুয়ে থাকলেও দেখবেন ভালো লাগছে। ঘরে ছোট শিশু থাকলে তাদের
সাথে খেলা করুন বা পরিবারের আপন মানুষদের সাথে গল্প গুজব করুন, আরাম করে
খাওয়া-দাওয়া সারুন। আস্তে আস্তে মনের গুমোট ভাবটা কেটে যাবে।
ইতিবাচক চিন্তা করুন:
বর্তমানে যে রাজনৈতিক পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে তাতে ইতিবাচক চিন্তা মাথায় না
আসারই কথা। কিন্তু মনে রাখবেন কোন দেশেই সব সময় এক পরিস্থিতি বিরাজ করে না।
সময়ের সাথে সাথে পরিস্থিতির পরিবর্তন হবেই। আমাদের দেশে আগে এই ধরনের
পরিস্থিতি ছিল না। সময়ের প্রয়োজনে এই পরিস্থিতি বর্তমানে বিরাজ করছে। আবার
সব কিছু সমাধান হলে পুনরায় দেশের অবস্থা ভালো হবে। এখন যে পরিস্থিতিতে আমরা
রয়েছি নেতিবাচক চিন্তা করলে তো আর এই পরিস্থিতির উন্নতি হবে না। সুতরাং
ইতিবাচক চিন্তাভাবনা করে মনকে শান্ত রাখতে পারেন।
খোঁজ খবর রাখুন:
দেশের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে ধারনা রাখুন। খোঁজ খবর করুন। নিয়মিত পত্র
পত্রিকা পড়ার অভ্যাস করুন। টিভিতে খবর দেখুন। কিন্তু কোন অবস্থাতেই খবর বা
সংবাদে আতঙ্কিত হবেন না। খোঁজ খবর রাখার এই মানে নয় যে আপনি প্রতিটি খবরে
নতুন করে অস্থির হবেন। খোঁজ খবর রাখার অভ্যাস করুন শুধুমাত্র দেশের কোথায়
কি হচ্ছে তা সম্পর্কে জানার জন্য, যদি পরিস্থিতি আরও ভয়ানক রূপ ধারন করে
তাহলে শান্ত মস্তিষ্কে তার মোকাবেলা করার জন্য। নিরাপত্তার বিষয়টি একটু
নিশ্চিত করা গেলে স্বভাবতই স্বস্তি পাবেন মনে।
ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন:
হরতালে বা অবরোধে কিছু ঝুঁকিপূর্ণ জায়গা অর্থাৎ যেসব জায়গায় বোমা ও ককটেল
ফাটার ভয় রয়েছে সে সব স্থানে পারতপক্ষে না যাওয়াই ভালো। স্বভাবতই যখন আমরা
জানি কোন জায়গা হরতাল বা অবরোধে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ সে জায়গার আশেপাশে নিজে বা
পরিবারের কেউ গেলে মনে অস্থিরতা কাজ করে। দুশ্চিন্তাগ্রস্থ হয় মন। সুতরাং
মনে শান্ত রাখতে চাইলে সবারই ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা এড়িয়ে চলাই উত্তম।
মেডিটেশন করুন:
দেশের অস্থির পরিবেশে মনকে শান্ত রাখার সবথেকে ভালো উপায় হচ্ছে মনকে অন্য
কাজে ব্যস্ত রাখা। প্রতিদিন সকালে উঠে অন্তত ১৫ মিনিট মেডিটেশন করার চেষ্টা
করুন। সকালে মাত্র ১৫ মিনিটের মেডিটেশন সারাদিনের জন্য আপনার মন থেকে
অস্থিরতা দূর করতে পারে। এছাড়া যখনই মন অশান্ত হয়ে উঠবে তখনই ৪-৫ মিনিটের
জন্য যোগব্যায়াম করুন। এতে তাৎক্ষণিক ফল পেতে পারেন।
বিনোদনমূলক কিছু করার চেষ্টা করুন:
মনকে অশান্তি থেকে দূরে রাখার জন্য বিনোদনমূলক কাজ করে দেখতে পারেন। গান
শুনুন অথবা ভালো কোন চলচিত্র দেখুন। এতে করে কিছু সময়ের জন্য হলেও আপনার মন
অন্য কাজে ব্যস্ত থাকবে। এবং দুশ্চিন্তামুক্ত হতে পারবেন খানিকটা সময়।
এছাড়া অন্যান্য আরও যে কোন সৃজনশীল কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখতে পারেন মনের
অশান্তি দূর করার জন্য।